নিজস্ব প্রতিবেদন: ইলিশ মাছ বিভিন্ন ভাবে সংরক্ষন করে থাকি আমরা।আজকের এই ভিডিওটিতে কিভাবে নোনা ইলিশ তৈরি করে সংরক্ষণ করা হয় তা দেখানো হয়েছে। আমরা সকলেই নোনা ইলিশের সাথে মোটামুটি পরিচিত। নোনা ইলিশ হচ্ছে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ কৃত ইলিশ। এ প্রক্রিয়ায় লবণ ব্যবহার করা হয় বলে একে নোনা ইলিশ বলা হয়। চলুন দেরী না করে দেখে নেয়া যাক কিভাবে এই নোনা ইলিশ তৈরি করা যায়। ভিডিওটিতে যে প্রক্রিয়ায় নোনা ইলিশ প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে তা নিচে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো।
প্রথমে আমি এখানে দুইটা ইলিশ মাছ নিয়েছি। আর ইলিশ মাছটা মিডিয়াম সাইজের। আপনারা যখন নোনা ইলিশ তৈরি করবেন তখন কেউ ঝাটকা ইলিশ মাছ নিতে পারেন।আমি কিন্তু মোটামুটি বড় টাইপের ইলিশ মাছ নিয়েছি। ইলিশ মাছের উপরে যে আইস ছিল সেগুলো ভালোভাবে ফেলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর মাছের পাখনা গুলো কেটে নিতে হবে। মাছের ফুলকা গুলো কেটে অথবা টেনে বের করে নিতে হবে।ফুলকাটা এমনভাবে টেনে বের করবেন যাতে করে মাথার ভিতরে কোন ফুলকার অংশ না থাকে।
নোনা ইলিশ তৈরি করা মানে হল খুব ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে কিন্তু এই কাজটা করতে হবে । ফুলকা গুলো বের করা হয়ে গেলে এবার দুইটা ইলিশ মাছের পেট কেটে ভিতরে যে নাড়িভুঁড়ি এবং আয়না আছে সেগুলো বের করে নিতে হবে। নোনা ইলিশ তৈরি করার সময় কিন্তু ডিমওয়ালা ইলিশ হলে খেতে ভালো লাগে না। ডিম ছাড়া ইলিশ মাছটাই কিন্তু নেওয়ার চেষ্টা করবেন। পেটটা কাটার পরে ভালোভাবে ইলিশ মাছটা ধুয়ে নিতে হবে।
এর পরবর্তীতে কিন্তু আর কোনভাবে ইলিশ মাছের পানি লাগানো যাবেনা। মাছটা ভালোভাবে পানি ঝরিয়ে একটা সুতি কাপড় কিংবা টিসু পেপার দিয়ে ভালো করে মুছে পানিশূন্য করে নিতে হবে। কাপড় টা কিন্তু অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে । সুতি কাপড় দিয়ে মাছ এমনভাবে মুছবেন যাতে করে কোন পানির অংশ না থাকে। যদি কিচেন টিস্যু না থাকে সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনারা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
এবার একটা চাকু দিয়ে মাছটাকে আড়াআড়ি ভাবে কেটে নিতে হবে। আর কিভাবে কেটে নিয়েছি সেটা কিন্তু আমি আপনাদেরকে দেখানো হয়েছে। ভিডিওতে ঠিক যেমনভাবে কাটা হয়েছে আপনারা ঠিক তেমন ভাবে কেটে নিবেন। যখন আপনারা এই মাছটা টুকরো করবেন তখন কিন্তু অনেক রক্ত বের হবে।যতই রক্ত বের হোক না কেন মাছ কিন্তু ধুবেন না। একবারের জায়গায় দুই থেকে তিনবার খুব ভালোভাবে মুছে রক্তটা পরিষ্কার করে নেবেন।
এখানে হাফ কেজি পরিমাণ লবণআর সাথে অ্যাড করে দিয়েছি এক টেবিল চামচ পরিমাণ হলুদ। হলুদ লবণ খুব ভালোভাবে মিক্স করে নিতে হবে। মিক্স করে এমনভাবে লবনটা মাছের গায়ে লাগাতে হবে যাতে কোন অংশ যাতে খালি না থাকে। এবার একটা প্লেট নিতে হবে আর প্লেটের উপরে কয়েকটা টিস্যু পেপার বিছিয়ে নিতে হবে। তারপর মাছটাকে আলতো করে ধরে প্লেটের উপরে বসিয়ে দিতে হবে। তারপর রেখে দিতে হবে 25 থেকে 30 মিনিটের জন্য।
তারপর একটি পাত্রে কয়েকটি টিস্যু পেপার বিছিয়ে পুনরায় মাছ গুলো দিয়ে 6 থেকে 7 ঘন্টার জন্য রেস্টে রাখতে হবে। 7 ঘণ্টা পর পাত্র থেকে মাছ গুলো বের করে নিতে হবে। এতে কিছুটা পরিমাণ পানি জমবে। কিন্তু ভয়ের কিছু নেই এটা স্বাভাবিক ভাবেই জমে। তারপরে একটি মাটির পাত্রে নিয়েছে টিস্যু বিছিয়ে মাছ গুলোর মধ্যে আবার ভালো করে লবণ মিক্স করে পাঁচ থেকে ছয় দিনের জন্য রেস্টে দিতে হবে।
আজ থেকে ছয় দিন পর বের করলে দেখা যাবে নিচে প্রচুর পরিমাণে পানি জমে আছে। তারপর মাছগুলোকে বের করে পাত্রটি পরিষ্কার করে আবারও 10 থেকে 12 দিনের জন্য পাত্রের মুখ ভালো করে আটকে দিয়ে রেখে দিতে হবে। এক্ষেত্রে পাত্রের মুখ এমনভাবে আটকাতে হবে যেন বাইরে বাড়িতে ঢুকতে না পারে এবং ভিতরের বাতাস বাহিরে বের হতে না পারে। এবার 10 থেকে 12 দিন পর তৈরি হয়ে গেল নোনা ইলিশ। এই প্রক্রিয়ায় আপনারা খুব সহজে তৈরি করে নিতে পারেন নোনা ইলিশ।
বিস্তারিত ভিডিওতে দেখুনঃ