নিজস্ব প্রতিবেদন: আজকের এই ভিডিওটিতে একটি মেয়ের জুম চাষ সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। যে কিনা খুব কম বয়সেই লেখাপড়ার পাশাপাশি জমি চাষ করে টাকা উপার্জন করছে। জুম চাষ সাধারণত পাহাড় এলাকায় পাহাড়ের ঢালু স্থানে করা হয়। জুম চাষ মূলত এক ধরনের চাষ পদ্ধতি। আজকে আমরা পাহাড়ি অঞ্চলের জুম চাষের পাশাপাশি, একজন চাষী মেয়ের চাষ সম্পর্কে জানব। জুম চাষঃ পাহাড়ি এলাকায় প্রচলিত এক ধরনের কৃষিপদ্ধতি। “জুম চাষ” বিশেষ শব্দে “ঝুম চাষ” নামেও পরিচিত।
“ঝুম চাষ” এক ধরনের স্থানান্তরিত কৃষিপদ্ধতি। এটি মূলত জঙ্গল কেটে পুড়িয়ে চাষ করা হয়, আবার সেই স্থানে জমির উর্বরতা কমে গেলে পূর্বের স্থান হতে কৃষি জমি স্থানান্তরিত করে অন্যত্র আবার কৃষি জমি গড়ে ওঠে। পাহাড়ের গায়ে ঢালু এলাকায় এই চাষ করা হয়। এই পদ্ধতির চাষে বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়। জুম চাষ পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের জীবন জীবিকার প্রধান অবলম্বন।
বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ২০০০০ হেক্টর ভূমি এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়। “ঝুম চাষ” ভারতে পোড়ু, বীরা, পোনম, প্রভৃতি নামেও পরিচিত। চাকমা ও মারমা সমাজের মানুষের মাঝে জুম চাষ বেশ জনপ্রিয়।মূলত কিছু (৩-৫) বছর পাহাড়ের গায়ে, কিছু স্থানে চাষ করে সেই স্থানকে উর্বরতা বৃদ্ধি করার জন্য রেখে দিয়ে, আবার পাহাড়ের অন্য স্থানে গিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে চাষাবাদ করাই হলো জুম চাষ। জুমচাষের জনসংখ্যার ঘনত্বের পার্থক্যের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হয়।
এ চাষপদ্ধতির উপর নির্ভরতা ভিত্তি করে জুমিয়া পরিবারকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায় ১. সার্বিকভাবে নির্ভরশীল, ২. আংশিকভাবে নির্ভরশীল ও ৩. প্রান্তিকভাবে নির্ভরশীল। জুম উপজাতীয়দের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়ায় জুমচাষে তাদের অনুসৃত পদ্ধতি স্থানভেদে এবং কৃষকদের শ্রেণীভেদেও পৃথক হয়। পৌষ-মাঘ মাসে সুবিধাজনক সময়ে চাষের জন্য এক টুকরো জঙ্গল নির্বাচন করা হয়। জমি নির্বাচনের সময় গাছ, বাঁশ ও আগাছাসহ পাহাড়ের গায়ের ঢালু জায়গাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
তারপর সেই জঙ্গলের সমস্ত গাছ, বাঁশ, ঝাড়-জঙ্গল কেটে ফেলা হয়। কাটার পর সেগুলি রোদে শুকানো হয় চৈত্র মাস পর্যন্ত। সাধারণত চৈত্র ও বৈশাখের শুরুতে এতে আগুন জ্বেলে দেওয়া হয়। তাতে শুকিয়ে যাওয়া গাছপালা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সঙ্গে ওপরের ১-২ ইঞ্চি মাটিও পুড়ে যায়। ছাই ও পোড়ামাটির জন্য জমি উর্বর হয়। এরপর দু-এক পশলা বৃষ্টি হলে জমি ভিজে নরম হয়। তারপর বীজ বোনার কাজ শুরু হয়। আজকের এই ভিডিওটিতে একটি মেয়ে জুম ফসল সংগ্রহের চিত্র ধারণ করা হয়েছে।
ভিডিওটি দেখে আমাদের প্রত্যেকের অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত যে, একজন মেয়ে হয়ে এই অল্প বয়সে পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের সাহায্যের জন্য জুম চাষ করছে। মেয়েটি পড়াশোনার পাশাপাশি প্রত্যেক দিন ভুট্টা সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে। যা দিয়ে তার পরিবারের খরচ এবং পড়াশুনার খরচ চালানো হয়।এটি শুধুমাত্র পরিবারের কথা চিন্তা করে এই বয়সে এত কষ্ট করে যাচ্ছে। মেয়েটির স্বপ্ন সে পড়ালেখা করে বড় হয়ে শিক্ষক হবে। এবং সে শিক্ষক হয় গরীব অসহায় মানুষদের সাহায্য করবে। জুম চাষ এবং মেয়েটির জীবন সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে ভিডিওটি দেখতে পারেন।
বিস্তারিত ভিডিওতে দেখুনঃ