কথায় বলে, একজন মাকে মা হয়ে ওঠার জন্য দিতে হয় অনেক বলিদান। সন্তানের জন্য মা পারেন সব কিছু করতে। সেটাই আরেকবার প্রমান করলেন মিশরের সিসা। মা হিসেবে তিনি এখন সকলের কাছে দৃষ্টান্ত। কি করেছেন এই সিসা? তিনি বদলে ফেলেছেন নিজের আত্ম পরিচয়টাই। গল্পটা শুনলে মনে হবে ঠিক যেন একটি সিনেমার গল্প।
পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই তাকে চিনত একজন পুরুষ হিসেবে। এভাবেই তিনি কাটিয়ে দিয়েছেন ৪৩ বছর। বিবাহের কয়েক বছরের মধ্যেই মৃত্যু হয় সীসার স্বামীর। স্বাভাবিকভাবেই বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে পড়ে যান তিনি।
কিন্তু তার জন্য পরিচয় বদলাতে হল কেন? সিসা বলেন “সমাজ আমাকে বাধ্য করেছে। আমাদের সমাজে একজন মেয়ের ক্ষমতা থাকলেও সে পুরুষদের কাজ করতে পারে না। কিন্তু আমাকে, আমার মেয়েকে কে দেখবে? তাই আমি পুরুষের রূপ নিয়ে কাজ শুরু করলাম।”
বেশি পড়াশোনা জানতেন না তিনি। সেই কারণেই অন্যান্য আর পাঁচজন পুরুষের মতো মাথায় পাগড়ি বেঁধে নিজের রূপ বদলে নেন তিনি। জুতো পালিশ দিয়ে শুরু করেন কাজ। সিসা বলেন, “প্রথম প্রথম সাজতে ভীষণ কষ্ট হতো।
কিন্তু সন্তানের কথা ভেবে সব কিছু মেনে নিয়েছি।” শুরুর দিকে অবশ্য পরিবার চেয়েছিল তাকে আবার বিয়ে দিতে। কিন্তু আর বিবাহ করতে চাননি সিসা। সেই কারণেই শেষ পর্যন্ত পরিবার ছেড়ে চলে আসেন তিনি। আর তারপরই শুরু হয় তার এই নতুন জীবন।
মিশরের এই মহিলার বয়স আপাতত ৮৫। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমত অবাক হয়ে যান সকলে। নিজের সন্তানের জন্য তার এই আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়েছে মিশর সরকারও। ইতিমধ্যেই ‘
দেশের সেরা মা’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। কোন পুরস্কারের জন্য সিসা নিশ্চই এ কাজ করেনি। সন্তানের ভালবাসাই তার একমাত্র পুরস্কার। তার এই জীবন কাহিনীতে এখন মুগ্ধ সারাবিশ্বের নেটিজেনরা।