তার বয়স শত বছর ছুঁইছুঁই। জীবনের চাকা স’চ’ল রাখতে এ ব’য়সেও রি’ক’শা প্যাডেল মারছেন নূরী। কংকালসার ঘামঝরা শ’রীরে কুঁজো হয়ে জামালপুর শহরের অলিতে গলিতে রি’ক’শা চালান তিনি। ব’য়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়ায় তার রি’ক’শায় উঠতে চায় না কেউ।তাই তেমন আয়-রোজগারও নেই।
মানুষের বা’জা’র সদাই বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যা পাওয়া যায় তা দিয়েই কোনো মতে দুই স’দ’স্যের সংসার চলছে।শহরের ত’মা’ল’ত’লা পিলখানা এলাকায় স’র’কা’রি জমিতে ঘর তুলে থেকেছেন ১০ বছর।পাথালিয়ায় ছিল ১২ শতাংশ জমি। ছেলেদের লিখে দিয়ে এখন তিনি নিঃস্ব। ৩ মে’য়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ৩ ছেলের মধ্যে দুই জন জমি বি’ক্রি করে চলে গেছে অন্যত্র। মেঝো ছেলের বাড়িতে দু চালা ভা’ঙা বেড়ার ঘরে এখন তিনি অনেকটা আ’শ্রি’তের মতো।
ছোট ছেলেরও ৫ স’দ’স্যের পরিবার। নূরীর ভরনপোষণের যো’গা’ন দিতে পারেন না তিনি। বা’ধ্য হয়ে তাই রি’ক’শা চালাতে হয়। মৃ”ত ময়েজ উদ্দিন শেখের ছেলে অতিশীপরবৃ’দ্ধ নূরী বর্তমানে বসবাস করছেন শহরের পা’থা’লি’য়া গ্রামে মেঝো ছেলে কালুর ভিটায়। মেঝো ছেলেরও অ’টো’বা’ই’ক চা’লিয়ে ৫ জনের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বাবা ও সৎ মাকে দেখাশোনা করা তার পক্ষে স’ম্ভ’ব হয় না।
ছেলে বেলাতেই নূরী জীবন যু’দ্ধ শুরু করেছিলের কুলির কাজ করে। পেটের দায়ে খড়ি, তুষ বেচে, রি’ক’শা চা’লিয়ে নানা কায়িক শ্রমের পেশায় নি’য়ো’জি’ত থেকে ৫৫ শতাংশ ব’স’তভিটা ও ১০ পাখি কৃষি জমি কিনেছিলেন। স্ত্রী, তিন ছেলে ও তিন মে’য়ে নিয়ে সু’খেই কাটছিল সংসার।
ছেলেদের লেখাপড়া করিয়েছেন। মে’য়েদের বিয়ে দিয়েছেন জমি বি’ক্রি করে। অবশিষ্ট ছিল ১২ শতাংশ ব’স’তভিটা। সেটুকুও ছেলেদের লিখে দিয়ে এখন তিনি সর্বস্বান্ত। এভাবেই কা’ন্না’জ’ড়ি’ত কণ্ঠে চোখ মুছতে মুছতে নূরী জানালেন তার ক’ষ্ট’মা’খা জীবনের গল্প।
জীবনের গতির মতো কমে গেছে নূরীর রি’ক’শা’র চাকা। রি’ক’শায় যাত্রী নিয়ে গান গেয়ে শহরের অলি-গ’লি’তে ঘুরে বেড়ানো এক সময়কার প্রা’ণ’চ’ঞ্চ’ল নূরীকে চোখে পড়ে না। একদিন রি’ক’শা চালালে দু’দিনই জীবনগাড়ি নিয়ে ঘরে পড়ে থাকতে হয়।
তবুও হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে রি’ক’শা বাইতে হচ্ছে জীবনের ঘানি টানতে। তার বৃ’দ্ধ ব’য়সে কুঁজো হয়ে রি’ক’শা টানার দৃশ্য দেখে শহরের পথেঘাটে চলাচলরত পথচারীরাও আ’ফ’সো’স করে।নূরী বলেন, আমার সব আছিলো। খুব ক’ষ্ট কইরা জমি জি’রে’ত করছিলেম।
তিনডা পুরির (মে’য়ে) বিয়ে দিয়ে এডা পুলারে নেহাপড়া করাইয়ে জমি জি’রে’ত শেষ অইছে। বাড়ি ভিঠের এট্টু জমি আছিলো তাও পুলারা নেইখে নিছে। এহন কেউ আমারে ভাত-কা’ফ’র দেয় না। বাহি দিন কিবেই কাটবো হেই চি’ন্তা’য় চোহে মুহে আ’ন্ধা’র দে’হি গো বাজান।