নিজস্ব প্রতিবেদন: আমরা বাঙালি মাত্রই ভোজন রসিক, বিশেষ করে গ্রাম গঞ্জের লোকাল যত খাবার আছে, বিভিন্ন পালা পার্বণ হোক অথবা মৌসুমী খাবার হিসেবে ,এসব খাবার একদম তুলনাহীন। স্বাদে, গন্ধে অনন্যা এসব খাবারমুখের রুচি যেমন ফিরিয়ে আনে, তেমনি বাঙালি হিসেবে আমাদের ঐতিহ্যকেও ধরে রাখে।
কচি কাঁঠালের এঁচোড় দিয়ে খাসির মাংস খায়নি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুস্কর। বিশেষ করে বৈশাখের শুরুতে যখন গাছে গাছে কাঁঠাল গুলো কিছুটা পরিপক্ক হওয়া শুরু করে, পহেলা বৈশাখ অথবা চৈত্র সংক্রান্তিতে কাচা কাঁঠালের এঁচোড় খাওয়ার যেন ধুম পরে যায় বাঙালিদের ঘরে ঘরে।
কিছুদিন আগে খাসির মাংস দিয়ে কচি কাঁঠালের এঁচোড় বানানোর একটা রেসিপি ইন্টারনেট দুনিয়ায় বেশ সাড়া ফেলছে দেখলাম। দুজন বৌদি খুব সুন্দর করে, সাবলীলভাবে এই রান্নার সম্পুর্ন প্রসেস টি ভিডিও করে দেখালেন।
তো সেই ভিডিও দেখে আমিও শিখেছি কি করে সহজেই খাসির মাংস দিয়ে কচি কাঠালের এঁচোড় রান্না করা যায়। চলুন তাহলে আপনাদের সাথে ও শেয়ার করি এই রান্নার স্টেপ বাই স্টেপ প্রসেসগুলো-
উপাদানগুলো বৌদি খুব সুন্দর করে প্রথমেই উপাদান গুলো দেখিয়ে দিয়েছেন। উনি যা যা নিয়েছেন এই রেসিপিটি করতে আমি ঠিক সেভাবেই ফলো করেছি।
∙এঁচোড় ∙মাটন, ধুয়ে পানি ঝড়িয়ে রাখা। ∙পেয়াজ, চাকা চাকা করে কাটা। ∙কাশ্মীরি লাল মরিচের গুঁড়া ∙হলুদের গুঁড়ো ∙ নুন ∙সামান্য চিনি ∙সরষের তেল ∙গোটা ধনিয়া, গোটা জিরা, গোটা গরম মসলা। ∙টক দই। ∙কাঁচা মরিচ, স্লাইস করে কাটা। ∙শুকনা মরিচ। ∙তেজপাতা। ∙রসুন, আদা টমেটো; কুচি করে কাটা।
স্টেপ বাই স্টেপ প্রসেস গুলো প্রথমেই এঁচোড় কেটে নিয়েছেন একজন বৌদি।হাতে ভালো করে তেল মাখিয়ে বৌদি এঁচোড় কাটলেন। এঁচোড়ের আঠা হাতে যেন না লাগে এজন্য উনি এঁচোড়ে লেবু মাখিয়ে নিয়েছেন।
এরপর চুলায় কড়াই দিয়ে মসলা রেডি করে নিয়েছেন আরেকজন বৌদি। মসলা গুলো ( শুকনো মরিচ, গরম মসলা, জিরা, ধনে) ভালো করে ভেজে সাইডে রেখে দিলেন।
এরপর কড়াইতে তেল দিয়ে পেয়াজ আদা অর্ধেক করে ভেজে এতে টমেটো দিয়ে ভেজে নিলেন। এই ভাজাটাও উনি আরেকটি পাত্রে নামিয়ে নিলেন। আরেকজন বৌদিকে দেখলাম পাশাপাশি ভেজে রাখা শুকনো মসলাগুলোকে, এবং টমেটো আদা আর পেয়াজের মিশ্রণ কে আলাদা করে পাটায় পিশে গুড়ো করতে।
তো আমাদের প্রধান রাঁধুনি বৌদি চুলায় কড়াই দিয়ে এতে পানি, হলুদের গুড়ো দিয়ে এঁচোড় গুলো সেদ্ধকরে নিলেন। পাশাপাশি মাটনের মধ্যে ফেটানো টক দই আর লবন দিয়ে মাখিয়ে আলাদা মেয়নেট হতে রেখে দিলেন কুড়ি মিনিটের জন্য।
আবার চুলায় শুকনো কড়াই দিয়ে এতে সরষের তেল দিলেন এবং এঁচোড় গুলোকে আলুর মত খুব ভালো করে ভেজে নিলেন। সর্বশেষ আবার চুলোয় কড়াই দিলেন, টমেটো পেয়াজ আর আদার মিশ্রণ টা ভেজে নিলেন সর্ষের তেল দিয়ে। এতে বাকী মসলা যেমন, স্লাইস করে কাটা মরিচ, কাশ্মীরি মরিচের গুঁড়ো ইত্যাদি দিয়ে ভালো করে কষিয়ে এতে মাটন দিয়ে আবার কষিয়ে নিলেন।
খানিক বাদে বৌদি আবার এতে এঁচোড় দিয়ে আবারো ভালো করে কষিয়ে পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে নিলেন। সব সেদ্ধ হয়ে গেলে মিহি করে রাখা গরম মসলা টা উপরে ছড়িয়ে দিলেন।
ব্যাস তিন চার মিনিট পরে নামিয়ে নিলেন কচি কাঠালের এঁচোড় দিয়ে মাটনের রেসিপি।
সবচেয়ে ভালো লাগলো পরিবারের সবাই কে নিয় খুব হাসিঠাট্টা করে বৌদিরা এই এঁচোড় রান্না দিয়ে ভাত খেলেন। বিশেষ করে বৌদির দাদু যখন কচি এঁচোড় কে গাছ পাঠা বলে হাসাহাসি করলেন,আমারখুব ভালো লেগেছে।
ভিডিও টি সত্যিই অসাধারণ হয়েছে, সবাই তো ভিডিওটির কমেন্ট বক্সে এসে বৌদিদের অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা জানাচ্ছেন। চাইলে আপনারাও ভিডিওটা দেখতে পারেন, লিংকটি নীচে দিয়ে দিলাম।