অনেকক্ষেত্রে একনজরে দেখে যাকে তুচ্ছ বলে মনে হয় সময়ের সাথে সাথে সেই পরিনত হয় বিশাল মহীরুহে।চাই শুধু ইচ্ছা শক্তি আর কখনও ভেঙে না পড়ার মানসিকতা।আর ইচ্ছা শক্তিতে বলীয়ান হতে পারলে অসম্ভবও হয়ে ওঠে সম্ভব। ওয়াইনাদের ছোট্ট গ্রাম চেন্নালোদে জন্মগ্রহন করা পিসি মোস্তাফার জীবন সম্ভবত এই কথাটির প্রকৃষ্ট উদাহরন। সামান্য ইডলি ধোসাই বদলে দিয়েছিল পিসি মোস্তাফার জীবন।
ফাস্ট ফুডের দুনিয়ায় আইডি ফ্রেশ সংস্থা আজ সকলের কাছেই কম বেশি পরিচিত। এই সুপরিচিত সংস্থারই মালিকের নামই পিসি মোস্তাফা। মোস্তাফা বেড়ে উঠেছিলেন খুবই সামান্য পরিবারে।কফিবাগানে কুলির কাজ করে দিন গুজরান করতেন মোস্তাফার বাবা।
ছোটবেলায় পড়াশোনার সাথে সাথে বাবার কাজে সাহায্য করাই ছিল মোস্তাফার কাজ। যার জেরে পড়াশোনায় খুব একটা মনোযোগ দিতে পারতেন না মোস্তাফা। এমনকি ক্লাস সিক্সে পড়ার স্ময় একবার ফেলও করেন তিনি। তবে তারপর থেকেই তিনি বোঝেন জীবনে পড়াশোনা কতখানি গুরুত্বপূর্ন।সেই শুরু পড়াশোনা নিয়ে আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
এরপর দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় প্রথম স্থানও অর্জন করেন মোস্তাফা। নিজের এই লাগাতার পরিশ্রম আর অনবদ্য জেদের জন্যই বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যন্ড টেকনোলজিতে কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার সু্যোগ পান মোস্তাফা এমনকি কোর্স শেষ হতে না হতেই চাকরিও পেয়ে যান ভারতীয় স্টার্টআপ ম্যানহ্যাটন অ্যাসোসিয়েটসে।
কিন্তু মোস্তাফার মনে স্বপ্ন ছিল নিজের কিছু তৈরী করার। শেষ পর্যন্ত ২০০৩ সালে কিছু একটা করার সুপ্ত বাসনা নিয়ে দেশে ফেরেন তিনি। যদিও তখনো কোন সিদ্ধান্তই নিয়ে উঠতে পারেননি তিনি।কিন্তু হাল ছাড়েননি মোস্তাফা। শেষ পর্্যন্ত ২০০৫ সালে মাত্র ২৫০০০ টাকা পুঁজি আইডি ফ্রেশ তৈরীর সিদ্ধন্ত নেন তিনি।
২০১৯-২০ সালের রেকর্ড অনুযায়ী সেই ২৫০০০ টাকা নিয়ে শুরু করা কোম্পানিরই বার্ষিক টার্নওভার এখন ৩৫০-৪০০ কোটি টাকা। পিসি মোস্তফা যখন তাঁর সংস্থা শুরু করেছিলেন, প্রথম দিন ৫০০০ কেজি চাল থেকে ১৫০০০ কেজি ইডলির মিশ্রণ প্রস্তুত করা হয়েছিল।মিশ্রন স্কুটারে লোড করে সেদিন বিক্রি করতে বেড়িয়েছিলেন।এখন এর প্রায়গুন মিশ্রন প্রতিদিন বিক্রি করে এই সংস্থা। বিভিন্ন শহরে এখন প্রায় কয়েকশো স্টোর রয়েছে আইডি ফ্রেশের।